ড্রাগন ফলের জাদুকরী পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা অপকারিতা-গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা, লাল ড্রাগন ফল ও ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা, এমনকি এই ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম আর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আজকে একদম খুঁটি নাটি আলোচনা হবে। আপনি প্রস্তুত তো? আজকের এই সকল তথ্য একদম নিখুঁতভাবে ও পর্যায়ক্রমে জানার জন্য !
আচ্ছা ! আমি ধরেই নিলাম যে আপনি ড্রাগন ফলের উপকারিতা জানার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আছেন। তাহলে জেনে নিন এই ড্রাগন ফলের জাদুকরী কিছু গুনাগুন যা একদমই বিস্ময়কর। ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে একদম খুঁটি নাটি বিস্তারিত।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা
এই ড্রাগন ফলের যত জাদুকরী উপকারিতা আছে চলুন সেসব সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। তবে তার আগে একটু সময় ব্যয় করে জেনে নিন যে এই ফলের মধ্যে আসলে কোন কোন উপাদানগুলো রয়েছে। অর্থাৎ যে উপাদান গুলো থাকার কারণে ড্রাগন ফলের এতো সব অবিশ্বাসকর উপকারিতা।
ড্রাগন ফলে ভিটামিন ও খনিজ হিসেবে রয়েছে ভিটামিন C, ভিটামিন B1, B2 ও B3, এছাড়াও আরো রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস। শুধু তাই নয় এর মধ্যে প্রচুর ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। যা মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
এখন ড্রাগন ফলের উপকারিতাগুলো দেখে নেই ;
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- হজমশক্তি উন্নত করে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সাহায্য করে
- আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে
- ত্বকের উজ্জ্বলতা ও চুলের গোড়া শক্ত করে
- শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে
- হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী
- ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে।

কিভাবে এতগুলো উপকারিতা প্রদান করে?
অবস্যই! আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে কিভাবেই বা ড্রাগন ফল এতো উপকার করে, তাই না? আসুন সেটাও জেনে নেই।
- ড্রাগন ফলের মধ্যে যে ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি- র্যাডিকেল দূর করতে সাহায্য করে। যার ফলে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে।
- ড্রাগন ফলে উচ্চমাত্রার ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও হজম শক্তির প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত করে।
- ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ড্রাগন ফল ইনসুলিন সেনসিটিভিটি উন্নত করতে অনেকটা সহায়তা করতে পারে।
- ড্রাগন ফলের বীজে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।ফলে, শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলগুলো (LDL) কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরলগুলোকে (HDL) বাড়ায়। তাই একদম হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে।
- এরপর, আয়রন হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন C, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পানি ত্বক উজ্জ্বল রাখে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
- ড্রাগন ফলের মধ্যে কম ক্যালোরি, কিন্তু বেশি ফাইবার ও পর্যাপ্ত পানি থাকায় এটি দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখে। ফলে অতিরিক্ত খাবারের প্রবণতা কমে যায়। তাই শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে এটি।
আরও পড়ুনঃ লেয়ার মুরগির ভ্যাকসিন সিডিউল ২০২৫ বিস্তারিত দেখে নিন
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
আপনার যদি মনে এইরকম প্রশ্ন তৈরী হয়ে থাকে যে, গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়া যাবে কিনা! তাহলে জেনে নিন ; আসলে ড্রাগন ফল হচ্ছে অনেক উপকারী একটা ফল, যার মধ্যে বেশ কিছু উপকারী উপকরণ সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন। বিশেষ কর, এটি খাওয়ার জন্য অনেক ডাক্তার সব সময়েই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এটি রক্ত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, এরপর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, আরো অনেক উপকারিতা প্রদান করে এই ড্রাগন ফল। সুতরাং, আপনি নিঃসন্দেহে এটি খেতে পারন। কেননা ড্রাগন ফলের উপকারিতা ব্যাপক।
একনজরে গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা দেখে নিন;
- শিশুর বৃদ্ধি ও মায়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টি সরবরাহ করে
- রক্তস্বল্পতা বা Anemia প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে
- খাদ্য দ্রুত হজমে সাহায্য করে
- ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে
- শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠনকে মজবুত করে
- রক্তচাপ ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- শরীরে শক্তি যোগায় ও ক্লান্তির ভাব দূর করে

ড্রাগন ফলের উপকারিতা অনেক। তবে এখানে কিছু সতর্কতাও আছে যেটা আপনাকে মনে রাখতে হবে! যদিও এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত বলা হবে, তারপর একটু সংক্ষিপ্ত করে জেনে নিন।
আরও পড়ুনঃ কোন সারের কি কাজ-পটাশ,টিএসপি,ইউরিয়া,বোরন সারের কাজ কি
⚠️সতর্কতা :
ড্রাগন ফলকে অবশ্যই পরিমানমতো খেতে হবে , প্রতিদিন ১/২ টুকরো বা ১ কাপের মতো উচিত। কোনো অ্যালার্জি বা হজমজনিত সমস্যা দেখা দিলে এটিকে অবস্যই খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তবে, যেকোনো বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফলের মধ্যে আবার কিছু পার্থক্য ও রয়েছে। যেমন ধরেন এই লাল ড্রাগন ফল। ড্রাগন ফলের উপকারিতা সব একই , এখানে লাল ড্রাগন বা সাদা ড্রাগন যেটাই হউক না কেন!
তবে, লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা সাদা ড্রাগন ফলের মতোই সবে একই, তবে এতে বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রাকৃতিক রঞ্জক (বিটালাইন) থাকার কারণে কিছু অতিরিক্ত স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।
লাল ড্রাগন ফলে বিটালাইন, ফ্ল্যাভোনয়েড, ভিটামিন C ও ফাইটোঅ্যালবুমিন থাকে, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এতে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমায়। এরপর হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। মানে এক কথায় সব একই।
লাল ড্রাগন ফল শুধু সুস্বাদু নয়, বরং হজম, হৃদযন্ত্র, রক্ত, ত্বক-চুল, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষভাবে উপকারী একটি ফল।
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
আপনি হয়তো জানেনই না যে ড্রাগন ফলের খোসাও আবার উপকারে আসে। আমি কি মিথ্যা বললাম? হতে পারে যে আপনি জানেন কিংবা অনেকে নাও জানতে পারে। তাহলে জেনে নিন এই ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতাসমূহ ;
ড্রাগন ফলে বিটালাইন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বার্ধক্যের ছাপ (wrinkles, fine lines) কমায়। এরপর আয়রন ও খনিজ উপাদান চুলের গোড়া মজবুত করে। বিশেষ করে , এটি প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়তে পারে।
আরও জানুনঃ টিএসপি সারের কাজ কি, টিএসপি সারের দাম এবং সারের ব্যবহার
তবে এটিকে খাওয়ার উপায় আপনাকে জানতে হবে।
ড্রাগন ফলের উপকারিতার মধ্যে এর খোসাও অনেক উপকারি ভুমিকা আলন করে । ড্রাগন ফলের খোসা সাধারণত সরাসরি খাওয়া হয় না। এটি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়—
- খোসা শুকিয়ে গুঁড়া করে স্মুদি বা চায়ে মেশানো।
- খোসার নির্যাস (extract) তৈরি করে হারবাল ঔষধ বা সাপ্লিমেন্টে ব্যবহার করে।
- ফেসপ্যাক বা হেয়ারপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
- খোসা সিদ্ধ করে সবজি বা স্যুপে ব্যবহার করা যায় যা বেশ কিছু দেশে প্রচলিত আছে।
বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়া আমি সব সময় উৎসাহিত করবো, কেননা এতে প্রচুর পরিমানে আয়রন রয়েছে। শুধু যে আয়রন তাই না, এর মধ্যে আরো অনেক পুষ্টি উপাদান আছে, যেগুলো একজন শিশু কিংবা বাচ্চাদের জন্য অনেক উপকারী।
বাচ্চাদের জন্য ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা ;
- সর্বোত্তম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- হজম শক্তি ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে
- প্রাকৃতিক হাইড্রেশন ও শক্তি যোগায়
- প্রয়োজনীয় ভিটামিন আর খনিজ উপাদানেই চাহিদা পূরণ করে
- ত্বক, চুল ও চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে
ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
আপনি ড্রাগন ফলকে আপনার ইচ্ছামতো যেভাবে খুশি খেতে পারেন, তবে খুব একটা বাঁধাধরা নিয়ম এখানে নেই বললেই চলে। যেমনঃ আপনি অন্য যেকোনো ফল যেভাবে কেটে খান কিংবা জুস তৈরী করে খান, এটাকেও সেভাবে আপনি খেতে পারবেন।
বিশেষ করে, নিয়মের ক্ষেত্রে কিছুটা কম বেশি হতে পারে। আপনি চাইলে এই ড্রাগন ফলের পূর্ণ উপকারিতা পাওয়ার জন্য আরো ভালোভাবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শও নিতে পারেন। প্রতিদিন অর্ধেক থেকে ১টি ফল খাওয়ার জন্য যথেষ্ট ।

আবার, আপনি চাইলে ড্রাগন ফলকে ছোট-ছোট টুকরো টুকরো করে খেতে পারেন। যেমনঃ আমরা এটার উপরের খোসাটা ফেলে দিয়ে ভিতরের টকটকে লাল মিষ্টি অংশটা ছোট-ছোট টুকরো করে খাই। মনে রাখবেন ; সাদা ড্রাগন ফল হলে ভিতরের অংশটা সাদা রংয়ের হবে , আর লাল ড্রাগন হলে ভিতরের অংশটা লাল রঙয়ের হবে।
আরো একটি কথা মনে রখবেন যে , এই ড্রাগন ফলটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এটিকে খুব ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিবেন। কেননা এগুলোর মধ্যে অংকে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।
ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক
ড্রাগন ফলের যে শুধু উপকারী দিকেই আছে তা কিন্তু নয়, এর বেশ কিছু ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে। তাই, আমি মনে করি যে আপনার এই ক্ষতিকরদিকগুলোও জানা প্রয়োজন আছে।
এই ক্ষতিকর দিকগুলো তৈরী হয় মূলত অসাধু ব্যাবসায়ীদের জন্য। তারা অসাধু উপায়ে যে ড্রাগন ফল চাষ করে সেখান থেকেই এই ক্ষতির দিকের সৃষ্টি হয়। আসুন তাহলে জেনে নিন ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিকসমূহ। অনেক চাষি ওভার গ্রোথ হরমোন (টনিক)ব্যবহার করেন। ফলে ;
- টনিক দেওয়া ফল সাধারণত অস্বাভাবিকভাবে বড় বা অর্ধেক লাল–অর্ধেক সবুজ রঙের হয়।
- এসব ফল খাওয়ার ফলে আপনবার লিভার, কিডনি ও হরমোনের ভারসাম্যে ক্ষতি করতে পারে।
- এইধরণের ড্রাগন ফল অতিরিক্ত খেলে পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া বা হজমের সমস্যা হতে পারে।
- তবে , অনেকের ক্ষেত্রে আবার অ্যালার্জি বা ত্বকে প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
মনে রাখবেন; আপনার যদি এলার্জি কিংবা ডায়াবেটিস থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময়
শুধু ড্রাগন ফলেই না, প্রতিটা ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক সময় মেনে খাওয়া উচিত। একজন দক্ষ ও যোগ্য চিকিৎসক সবসময় আপনাকে এইরকম পরামর্শই প্রদান করবে। তেমনি ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় রয়েছে।
এই ড্রাগন ফল খাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে সকালবেলা। কারণ তখন পরিপাকতন্ত্র ফলের শর্করা দ্রুত ভেঙে পুষ্টি শোষণ দ্রুত করে থাকে। তবে এটিকে আপনি মধ্যাহ্নভোজ বা রাতেও খেতে পারবেন। এই ড্রাগন ফল প্রতিদিন খাওয়া নিরাপদ এবং হজম, অনাক্রম্যতা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ব্যাপক সাহায্য করে।
সকাল বিকাল কিংবা রাত আপনি চাইলে ৩ বেলায় খাইতে পারবেন।

শেষ কথা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা- অপকারিতা ২ টায় আছে, আর আমি আপনাকে আমার পক্ষ থেকে যতদূর সম্ভব হয়েছে অনেক রিচার্জ করে, অনেক তথ্য ঘাটাঘাটি করে যতদুর জানতে পেরেছি ড্রাগন ফলের উপকারিতা ততটুকুই আপনার সামনে তুলে ধরেছি। ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আমার ভুল ভ্রান্তি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আর আমি আশাবাদী যে আপনি ড্রাগন ফলের সব জাদুকরী উপকারিতা এবং এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে মোটামুটি ভালো একটা ধারণা পেয়ে গেছেন।
আরও পড়ুনঃ স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি- বীজ বপন পদ্ধতি,গাছের পরিচর্যা ও বীজের দাম
FAQ
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল খেলে কি পায়খানা লাল হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ। বিশেষ করে লাল ড্রাগন ফল (Red/Purple flesh dragon fruit) খেলে অনেক সময় মলের (পায়খানা) রঙ লাল বা গোলাপি হতে পারে। এর কারণ হলো এতে থাকা বেটালাইন (betalains) নামের প্রাকৃতিক রঞ্জক পদার্থ।
👉তবে, চিন্তার কিছু নেই, এটা কোনো রোগ বা রক্তপাত নয়, স্বাভাবিক ঘটনা।
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল খেলে শরীরের কি উপকার হয়?
উত্তরঃ ড্রাগন ফলকে সুপারফুড বলা হয়। এর উপকারিতা –
- ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর → রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- ফাইবার সমৃদ্ধ → হজম ভালো করে, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
- লো ক্যালরি, ফ্যাট-ফ্রি → ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম থাকে → হাড় ও রক্তের জন্য উপকারী।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (betalains, flavonoids, phenolic acid) → শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি- Radicals কমায়, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে?
উত্তরঃ না, বরং গবেষণায় দেখা গেছে –
- ড্রাগন ফলে প্রাকৃতিক ফ্রুক্টোজ থাকলেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) কম।
- ফাইবার রক্তে শর্করা হঠাৎ বাড়তে দেয় না।
- কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ইনসুলিন সেনসিটিভিটি উন্নত করে।
- 👉 তবে ডায়াবেটিস রোগীদের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে খাওয়া উচিত (প্রতিদিন আধা থেকে এক কাপ পর্যন্ত)।
প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল খেলে কি প্রস্রাব লাল হয়?
উত্তরঃ কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হ্যাঁ। বিশেষ করে লাল ড্রাগন ফল খেলে মূত্র (প্রস্রাব) হালকা লাল বা গোলাপি হয়ে যেতে পারে। এর কারণও সেই বেটালাইন রঞ্জক পদার্থ।
👉এটা একেবারেই ক্ষতিকর নয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যায়।
I am Moshiur Rahman, an enthusiastic writer on agricultural information and research. I strive to deliver reliable and easy-to-understand information on modern agricultural technology, crop production, agricultural loans, and agricultural development, so that farmers and all those involved in agriculture can benefit.